ঢাকা, ১২ ডিসেম্বর২০২২ইং (দেশপ্রেম রিপোর্ট): জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের (জিএম কাদের) দলীয় কার্যক্রম পরিচালনায় ওপর আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চলছে। তবে আগামী দিনেও তিনি দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন কিনা সেই বিষয়ে মঙ্গলবার আদেশ দেওয়ার দিন ধার্য করেছে আপিল বিভাগ। আজ সোমবার দুপুরে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ আগামীকাল এ রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেন।
এর আগে জিএম কাদেরের দলীয় কার্যক্রম পরিচালনার ওপর জজকোর্টের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট আবেদনের শুনানি হয়। আদালতে জিএম কাদেরের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম। আর জিয়াউল হক মৃধার পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা।
গত ৪ অক্টোবর জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কৃত নেতা, সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে জজকোর্টে মামলা করেন।
বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৩১ অক্টোবর ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত জিএম কাদেরের দলীয় যাবতীয় কার্যক্রমের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন। পরে জিএম কাদেরের ওপর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করা হয়।
গত ২৪ নভেম্বর ওই আবেদনের ওপর শুনানির জন্য জেলা জজ আদালতে মিস আপিল দায়ের করা হয়। কিন্তু সেই আবেদন নামঞ্জুর করেন জেলা জজ আদালত।
পরে ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন জিএম কাদের। আবেদনের শুনানির পর গত ২৯ নভেম্বর বিচারপতি শেখ আবদুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন একক হাইকোর্ট বেঞ্চ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরের দায়িত্ব পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞার আদেশ স্থগিত করেন। একই সঙ্গে এ বিষয়ে রুল জারি করেন।
এরপর ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে চেম্বার জজ আদালতে আবেদন জানানো হয় জিএম কাদেরের পক্ষে। সে আবেদনের শুনানি শেষে গত ৩০ নভেম্বর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞার ওপর হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ স্থগিত করেন চেম্বার জজ আদালত। এর ফলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরের দায়িত্ব পালন আটকে যায়।
একইসঙ্গে আবেদনটি আপিল বিভাগে শুনানির জন্য পাঠানো হয়। যার ধারাবাহিকতায় আবেদনটির শুনানি নিয়ে আদেশের দিন নির্ধারণ করলেন আপিল বিভাগ।
দলটির বহিষ্কৃত নেতা জিয়াউল হক মৃধার দায়ের করা মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ১৭ সেপ্টেম্বর অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধাকেও জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করেন, যা সম্পূর্ণ অবৈধ।
তাই ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বরের কাউন্সিলসহ চলতি বছর ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বহিষ্কার আদেশ অবৈধ ঘোষণা করতে এবং হাইকোর্ট বিভাগের রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় পার্টির পরবর্তী কাউন্সিল স্থগিত রাখতে মামলায় আদেশ চাওয়া হয়।
মামলার বিবরণীতে বলা হয়, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। এরপর বিবাদী জিএম কাদের হাইকোর্ট বিভাগের একটি রিট মামলা বিচারাধীন থাকার পরও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ওই বছর ২৮ ডিসেম্বর কাউন্সিল করে নিজেকে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেন।
Leave a Reply